বুধবার, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ০৬:২৮ অপরাহ্ন

সংবাদ শিরোনাম:
‘ন্যায়বিচার ও নৈতিক মূল্যবোধ প্রতিষ্ঠায় দর্শনের শিক্ষা জরুরি’ সিপাহী বিপ্লব ও সংহতি দিবস উপলক্ষ্যে মুলাদীর সোনামদ্দিন বন্দরে বিএনপির আলোচনা সভা মুলাদীর চর বাটামারা জমির দখল পাচ্ছে না খোরশেদা আক্তার ১৯৭১ এর মুক্তিযুদ্ধ ২০২৪ এর পুনর্জন্ম : উপদেষ্টা শারমীন এস মুরশিদ সংবিধান বিশেষজ্ঞ ড. কামাল হোসেনের সাথে সংবিধান সংস্কার কমিশনের সাক্ষাৎ মিথ্যা মামলার হয়রানি থেকে মুক্তি চায় আলি আকবার পরিবারবর্গ জলবায়ু পরিবর্তন রোধে জীবাশ্ম জ্বালানির ব্যবহার কমাতে হবে : উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান অর্ন্তবর্তী সরকারের অন্যতম কাজ শহীদ পরিবারকে সহায়তা ও আহতদের পরিপূর্ন চিকিৎসা : মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা আবারো এলডিপির যুগ্ম মহাসচিব হলেন সালাহ উদ্দীন রাজ্জাক যৌথ অভিযানে ভোলায় অস্ত্রসহ দুই ডাকাত আটক

বেসরকারি খাতে যাচ্ছে গ্যাস-বিদ্যুতের প্রি-পেইড মিটার

নিজস্ব প্রতিবেদক ॥

বেসরকারি খাতে বিদ্যুৎ ও গ্যাসের প্রি-পেইড মিটার বাণিজ্যের দুয়ার খুলেছে। সম্প্রতি জ্বালানি বিভাগ এ সংক্রান্ত একটি নীতিমালা জারি করেছে। ওই নীতিমালা অনুযায়ী, যেকোনও আগ্রহী উদ্যোক্তা কেউ গ্যাস-বিদ্যুতের প্রি-পেইড মিটার আমদানি করতে পারবেন। এমনকি চাইলে বাণিজ্যিকভাবে বিক্রির উদ্দেশ্যে দেশে প্রি-পেইড মিটার তৈরির জন্য কারখানাও বসাতে পারবেন তারা।

বেসরকারি কোনও একক কোম্পানি এগিয়ে না এলেও প্রি-পেইড মিটার তৈরির জন্য দুটি সরকারি প্রতিষ্ঠান কারখানা স্থাপন করেছে। তবে, এই দুটি কারখানা করা হয়েছে বিদ্যুতের প্রি-পেইড মিটার তৈরির জন্য। যার একটি তৈরি করেছে ওয়েস্ট পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি (ওজোপাডিকো), অন্যটি তৈরি করেছে রুরাল পাওয়ার কোম্পানি (আরপিসিএল)। তবে, এখনও কেউ গ্যাসের প্রি-পেইড মিটার তৈরির কারখানা নির্মাণে এগিয়ে আসেনি।

বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ এ বিষয়ে বলেন, আমরা এর আগে বেসরকারি পর্যায়ে বিদ্যুতের প্রি-পেইড মিটার তৈরিকে ছেড়ে দিয়েছি। এখন গ্যাসেরটিও বেসরকারি খাতে ছেড়ে দেওয়া হলো।

প্রতিমন্ত্রী বলেন, গ্যাসের ক্ষেত্রে দুই চুলার একজন গ্রাহক প্রতিমাসে এখন ৯৭৫ টাকা বিল পরিশোধ করেন। কিন্তু এর বিপরীতে প্রি-পেইড মিটার যারা ব্যবহার করছেন, তাদের বিল আসছে সর্বোচ্চ ৪৫০ টাকা। ফলে একজন গ্রাহক প্রতিমাসে ৪৭৫ টাকা প্রি-পেইড মিটারে সাশ্রয় করতে পারছেন।

উল্লেখ্য, গ্যাসের মোট গ্রাহক ৪৩ লাখের মধ্যে তিন লাখের মতো গ্রাহকের প্রি-পেইড মিটার রয়েছে। ২০০৫ থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত—১৫ বছরে সরকার মাত্র পৌনে তিন লাখ গ্রাহককে প্রি-পেইড মিটার দিতে পেরেছে। বাকি আছেন আরও প্রায় ৪০ লাখ গ্রাহক। সরকার নতুন করে গ্যাস সংযোগ বন্ধ করে দেওয়ায় আবাসিকে নতুন প্রি-পেইড মিটার ৪০ লাখের মধ্যেই সীমিত থাকবে। গ্যাসের এই মিটার বেসরকারি খাতে দিতে চলতি বছরই আবাসিক পর্যায়ে খোলা বাজার থেকে প্রি-পেইড ‘ক্রয় ও স্থাপন নীতিমালা-২০১৯’ নামে একটি নীতিমালা করা হয়েছে।

সারাদেশে বিদ্যুৎ গ্রাহকের সংখ্যা তিন কোটি ৫৭ লাখ। আর সেচ গ্রাহক রয়েছেন আরও তিন লাখ ৬৪ হাজার। অন্যদিকে, গ্যাসের গৃহস্থালি সংযোগ রয়েছে ৪৩ লাখ। অর্থাৎ মিটার বাণিজ্য রয়েছে প্রায় চার কোটি। গ্যাসে সংযোগ বন্ধ থাকলেও বিদ্যুতে নতুন নতুন সংযোগ হচ্ছে। একই মিটার কারখানা বিদ্যুৎ ও গ্যাসের মিটার তৈরির বড় বাণিজ্যের সম্ভাবনা রয়েছে। একটি মিটার সাধারণত ১০ বছর চলে থাকে। তবে কোনও কোনও মিটার আরও আগেও অকেজো হয়ে যায়।

খোলা বাজারে কীভাবে এই মিটার বাণিজ্য সম্প্রসারণ করা হবে’—জানতে চাইলে জ্বালানি বিভাগের এক কর্মকর্তা বলেন, ‘বিদ্যুৎ ও গ্যাসের মিটার কেমন হবে, তা নির্দিষ্ট করে দেওয়া হয়েছে। যে কোম্পানিই মিটার তৈরি করবে, তাদের মিটারে নির্ধারিত বিষয়গুলো থাকতে হবে। এই মিটারগুলো নির্ধারিত পরীক্ষাগারে পরীক্ষা করতে হবে। সময়ে সময়ে নির্দিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে ছাড়পত্রও নিতে হবে। এক্ষেত্রে গ্যাসের হলে পেট্রোবাংলা আর বিদ্যুতের হলে বিতরণ কোম্পানিগুলোর কাছ থেকে ছাড়পত্র নিতে হবে।

‘গ্রাহকের ‍সুবিধা কী’—জানতে চাইলে আরেকজন কর্মকর্তা বলেন, গ্রাহক ব্যবহারের মাঝখানেই বিল দেখবেন। তিনি দেখতে পাবেন কতটুকু ব্যবহার করা হয়েছে। ফলে গ্রাহক নিজেই হিসাব করে বিদ্যুৎ-গ্যাস ব্যবহার করবেন। এক্ষেত্রে বিতরণকারী প্রতিষ্ঠানের কোনও বকেয়া থাকবে না। এতে সিস্টেম লস কমে এসে সরকারের রাজস্ব আদায় বাড়বে।

এদিকে, প্রচলিত প্রি-পেইড মিটারের চেয়ে বিদ্যুতে আরও আধুনিক স্মার্ট প্রি-পেইড মিটার এসেছে বাজারে। এই প্রি-পেইড মিটার দেশের একটি বিদ্যুৎ বিতরণ কোম্পানি ‘ঢাকা ইলেক্ট্রিক সাপ্লাই কোম্পানি লিমিটেড (ডেসকো) ব্যবহার করছে। স্মার্ট মিটারে মোবাইল ফিচারের মাধ্যমে ব্যবহার দেখা যায়। বলা হচ্ছে, আরও আধুনিক প্রযুক্তি আসছে বিতরণ ব্যবস্থায়, যাকে স্মার্ট গ্রিড হিসেবে উল্লেখ করা হচ্ছে। এই ব্যবস্থায় বিতরণ কোম্পানি সার্ভিস সেন্টারে বসেই রক্ষণাবেক্ষণ করতে পারবে। আবার গ্রাহকও তার সমস্যার কথা মোবাইল অ্যাপসে গিয়ে বিতরণ কোম্পানিকে জানাতে পারবেন।

জানতে চাইলে ঢাকা পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি (ডিপিডিসি)-এর নির্বাহী পরিচালক (অপারেশন) এটিএম হারুন অর রশিদ বলেন, ‘ঢাকায় আমাদের গ্রাহক প্রায় ১৩ লাখ। এরমধ্যে প্রায় তিন লাখ গ্রাহক প্রি-পেইড মিটার ব্যবহার করছেন। এছাড়া কামরাঙ্গীরচর, লালবাগসহ বেশ কিছু এলাকায় স্মার্ট মিটার বসানো হয়েছে।’ তিনি আরও বলেন, দরপত্রের মাধ্যমে বেসরকারি কোম্পানিগুলোর কাছ থেকে আরও আট লাখ স্মার্ট মিটার নেওয়ার প্রক্রিয়া চলছে।

একই ধরনের কাজের প্রক্রিয়া শুরু করেছে বিদ্যুতের অন্য বিতরণ কোম্পানিগুলোও।

Please Share This Post in Your Social Media

© All rights reserved © 2017 ithostseba.com
Design & Developed BY Hostitbd.Com
Social Media Auto Publish Powered By : XYZScripts.com